মালদা: ব্যাঙ্গালোরে নার্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়ার নাম করে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার টিউশন শিক্ষক। ওই প্রতারক টিউশন শিক্ষকের নাম কাঞ্চন গুপ্তা। বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের তুলসীহাটা এলাকায়। বুধবার মালদা জেলার চাঁচলের পিডব্লুডি অফিসের বিপরীতে জাতীয় সড়কের ধারে একটি বেসরকারি সংস্থার শাখা থেকে তাকে পাকড়াও করে চাঁচল থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাঁকে চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে বলে জানান চাঁচল থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুণ্ডু।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এদিন টাকা ফেরতের দাবীতে টিউশন শিক্ষক কাঞ্চন গুপ্তা কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্ৰামের প্রতারিত ছাত্রছাত্রী সহ অভিভাবকেরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। খবর পেয়ে চাঁচল থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এরপর তাকে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ জানান, এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার দুই টিউশন শিক্ষককে এজেন্ট করে চাঁচল মহকুমা জুড়ে ছাত্র ছাত্রী সংগ্রহ করে বেড়াত কাঞ্চন গুপ্তা। অভিভাবক ও ছাত্র ছাত্রীদের মিষ্টি কথার জালে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিত বলে অভিযোগ। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে চাঁচল মহকুমা এলাকার একাধিক যুবক-যুবতী উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর উদ্যোগী হয়ে এই প্রশিক্ষণ নিতে তারা চাঁচলের ঐ বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শাখায় যোগাযোগ করেন। প্রায় ২২ জন ছাত্রছাত্রী ব্যাঙ্গালোরে নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হয়। এর জন্য কেউ ১ লক্ষ আবার কেউ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দেন চাঁচলের সংস্থার কর্ণধার কাঞ্চন গুপ্তাকে বলে দাবী। তারপরে ছাত্রছাত্রীরা বেঙ্গালোরে গেলে সেখানে কলেজ দেখতে পায়নি। কোনও এক হোটেলে আবাসিকের নাম করে রাখা হলেও কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি।অথচ সেখানে ছাত্রছাত্রীদের হেনস্থা করা হতো বলে অভিযোগ। কোনও রকমে তারা পালিয়ে বাড়ি ফিরে আসে।
ওই শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে,প্রায় তিন লক্ষ টাকা দিয়ে তিন বছরের জন্য নার্সিংয়ের কোর্স করানো হয়।সেই নিয়ম মেনেই ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয়। তবে আসল ডকুমেন্ট গুলিও জমা রেখে দিত ওই সংস্থা।কাঞ্চন গুপ্তার নামে এর পূর্বেও একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এলাকায় তাকে দেখা যেত না, গা ঢাকা দিয়ে চলত। কাঞ্চন গুপ্তা বিভিন্ন এলাকায় এজেন্ট ছড়িয়ে এই ধরনের প্রতারণার জাল বুনেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতারিত ছাত্র আব্দুর রহমান জানান, কাঞ্চন গুপ্তা কে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি। এ রকম অনেকেই দিয়েছে। বেঙ্গালুরুতে পাঠালে সেখানে গিয়ে দেখি কোনও কলেজে ভর্তি করানো হয়নি।একটি হোটেলে আটকে রাখা হয়। দেড় মাস পর কোনও প্রশিক্ষণ না পেয়ে বাধ্যতামূলক বাড়ি ফিরে আসতে হয়। তাদের একবছর নষ্ট করেছে কাঞ্চন গুপ্তা। টাকা ফেরত চাওয়ার পাশাপাশি তারা শাস্তির দাবী করেন।
ওই সংস্থার কর্ণধার কাঞ্চন গুপ্তার দাবী, সেও প্রতারণার শিকার। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পেশ করা হবে।


No comments:
Post a Comment