যুবকের মৃত্যুতে 'জড়িত' পথ-কুকুর পৌঁছে গেল বাড়িতে, সন্তানহারা মায়ের হাতে মাথা
কর্ণাটক: মানুষের মস্তিষ্কের মতই কুকুরের মস্তিষ্কও প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া করে। বিশেষত আবেগ-অনুভূতির বহিঃপ্রকাশে মানুষের আর কুকুরের মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া প্রায় একই রকম হয়, হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীদের এই দাবী যে কতটা সত্যি, তার প্রমাণ মিলল কর্ণাটকের একটি ঘটনায়।
গত ১৬ নভেম্বর কর্ণাটকের শিবমোগায় জেলার ভদ্রাবতী তালুকার রাস্তার একটি কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে একুশ বছর বয়সী যুবক তিপেশ বাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যায় এবং মাথায় গুরুতর চোট লেগে তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু, এরপরে যা ঘটল, তা হয়তো চলচ্চিত্রকেও হার মানাবে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনার দিন কয়েক পর ত্রিপেশের বাড়িতে সটান পৌঁছে যায় কুকুরটি। তারপর সদ্য সন্তানহারা মায়ের হাতে মাথা রেখে দেয় সে। সেখানে উপস্থিত সকলেরই এমন মনে হয়, যেন সন্তানহারা মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে অবলা প্রাণীটি।
তিপেশের মা যশোদাম্মার কথায়, 'ত্রিপেলের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানের পরই কুকুরটি আমাদের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, এলাকার পথকুকুররা তাকে তাড়িয়ে দেয়। পরে কোনওভাবে বাড়িতে ঢুকে সোজা আমার হাতে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে ও। আমাদের মনে হয়েছে, তিপেশের মৃত্যুতে সমবেদনা জানাতেই এমন আচরণ করছে কুকুরটি। এখন ও আমাদের সঙ্গেই থাকে।'
তিপেশের এক আত্মীয়ের দাবী, প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে এই বাড়িতে এসেছিল কুকুরটি। তিনি বলেন, 'দুর্ঘটনাস্থল থেকে তাদের বাড়ি ৮ কিলোমিটার দূরে। যে গাড়িতে তিপেশের দেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হচ্ছিল, সেটির পিছু নেয় কুকুরটি। তারপর শেষকৃত্যের সময়ও বাড়ির আশপাশেই ঘুরে বেরিয়েছিল সে। দিন তিনেক পরে শেষ পর্যন্ত বাড়িতে ঢুকে ত্রিপেশের মায়ের হাতে মাথা রেখে সেখানে বসে পড়ে সে।' মৃত যুবকের বোন চন্দনা জানিয়েছেন, কুকুরটির ওপর কোনও ক্ষোভ নেই তাঁদের। ওটা নিছকই একটা দুর্ঘটনা ছিল। ত্রিপেশের বোন বলেন, 'কুকুরটি এখন আমাদের ঘরেই আছে। '


No comments:
Post a Comment