রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নতুন কিছু নয়, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই বিবাদ আরও দৃঢ় হয়। সোমবার সেই বিবাদ যেন আরও চরমে পৌঁছায়। একদিকে সংসদে রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অপসারণের বিষয়ে অনুরোধ জানান তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে এদিনই রাজ্যপালের ওপর বিস্ফোরক অভিযোগ এনে তাঁকে ট্যুইটারে ব্লক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীকে ফের নিশানা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
রাজ্যপাল ট্যুইট করেন, "সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫৯- এর অধীনে এটি সুনিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যে, রাজ্যে কেউই সাংবিধানিক মানদন্ড ও আইনের নিয়মগুলোকে ব্লক করতে পারে না।"
উল্লেখ্য, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে রাজ্যপালকে ব্লক করেছেন। রাজ্যপাল বলেছিলেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব রাজ্যপালের চাওয়া তথ্য দেওয়া, তবে গত দুই বছর ধরে তা দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, তিনি ধনখড়ের ট্যুইটগুলিতে বিরক্ত ছিলেন, তাই তিনি এই পদক্ষেপ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও বলেন, "আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বহুবার চিঠি দিয়ে ধনখড়কে অপসারণের দাবী জানিয়েছি, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।"
মমতা বলেন, রাজ্যপাল মুখ্য সচিব এবং পুলিশের মহাপরিচালককে (ডিজিপি) হুমকি দিচ্ছিলেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন যে রাজ্যপাল ধনখর টুইটের মাধ্যমে সরকারী আধিকারিকদের হুমকি দিচ্ছেন যেন তারা তাঁর বন্ডেড শ্রমিক। তিনি মা ক্যান্টিনের ডিম ভাতের পর্যন্ত হিসেব চাইছেন। এমনকি রাজভবন থেকে ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর তাকে ব্লক করা নিয়ে পাল্টা রাজ্যপাল বলেন, "সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫৯- এর অধীনে এটি সুনিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যে, রাজ্যে কেউই সাংবিধানিক মানদন্ড ও আইনের নিয়মগুলোকে ব্লক করতে পারে না।"
রাজ্যপাল আরও বলেন, "অনুচ্ছেদ ১৬৭-এর অধীনে, মুখ্যমন্ত্রীর সাংবিধানিক কর্তব্য যে, তিনি রাজ্যের বিষয়গুলি প্রশাসন এবং আইনের প্রস্তাবের সঙ্গে সম্পর্কিত এমন তথ্য প্রদান করুন, যা রাজ্যপাল দাবী করেন। দুই বছর ধরে রাজ্যপালের কাছে তথ্য ব্লক কেন?"
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব মমতার তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই। রাজ্যপাল ক্রমাগত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে নিশানা করছেন এবং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এমনকি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষেও রাজ্যপাল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। শুধু তাই নয়, সংসদ ও বিধানসভায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনারও প্রস্তুতি নিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার, বলে সূত্রে খবর।
No comments:
Post a Comment