বর্তমানে সারাদেশে শবনম মামলার আলোচনা চলছে। স্বাধীন ভারতে প্রথমবারের মতো কোনো নারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলে শবনম নামের এক নারীর ফাঁসি হবে। তবে ফাঁসির তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। শবনম তার প্রেমিক সেলিমকে নিয়ে তাদের বাড়িতে রক্তাক্ত খেলা খেলে।
বর্তমানে তিনি রামপুরের কারাগারে বন্দী, আজ আমরা আপনাদের বলতে যাচ্ছি শবনম মামলাটি কী এবং ফাঁসির ঠিক আগে ফাঁসির আসামির কানে জল্লাদ কী বলে- যে কোনো অপরাধীকে ফাঁসি দেওয়ার আগে জল্লাদ কেবলমাত্র বন্দীর ওজন,কুশপুত্তলিকা ঝুলিয়ে বিচার করে। এরপর ফাঁসির দড়ির আদেশ দেওয়া হয়। দোষী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের ১৫ দিন আগে জানানো হয় যাতে তারা শেষবারের মতো দেখতে পারে। ফাঁসি কার্যকরের ঠিক আগে জল্লাদ অপরাধীর কাছে এসে কানে কানে বলে, আমাকে ক্ষমা করো, আমি একজন সরকারি কর্মচারী। আমি আইনের কাছে বাধ্য।
অন্যদিকে অপরাধী হিন্দু হলে জল্লাদ তাকে রাম-রাম বলে ডাকে আর মুসলমান হলে তাকে শেষবারের মতো সালাম দেয়। একথা বলার পর জল্লাদ লিভার টেনে ঝুলিয়ে রাখে যতক্ষণ না অপরাধীর জীবন চলে যায়। এর পর দোষীদের নাড়ি পরিমাপ করেন ডাক্তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হলে পরে স্বজনদের কাছে দেহ হস্তান্তর করা হয়। জানিয়ে রাখি, ফাঁসির দিন বন্দিকে স্নান করিয়ে নতুন জামা দেওয়া হয়। ভোরে জেল সুপারের তত্ত্বাবধানে কারারক্ষীরা বন্দিকে ফাঁসি কক্ষে নিয়ে আসে। ফাঁসির সময় জল্লাদ ছাড়াও তিনজন আধিকারিক সেখানে উপস্থিত থাকে। যেখানে জেল সুপার, মেডিকেল অফিসার ও ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। ফাঁসির আগে, সুপারিনটেনডেন্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে জানান যে বন্দীকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয় । মৃত্যু পরোয়ানায় বন্দীর স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
ফাঁসির আগে বন্দীর কাছে তার শেষ ইচ্ছা জিজ্ঞেস করা হয়। এমতাবস্থায় বন্দীর একই ইচ্ছা পূরণ হয় যা জেল ম্যানুয়ালে রয়েছে। ফাঁসির সময় দোষীদের সঙ্গে শুধু জল্লাদ থাকে। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার বাওয়ান খেদি গ্রামের বাসিন্দা শবনম, প্রেমিক সেলিমসহ মোট ৭ জনকে খুন করেন। ২০০৮ সালের ১৪-১৫ এপ্রিল রাতে নিজের বাড়িতে রক্তক্ষয়ী খেলা খেলেন। সে তার বাবা-মা, দুই ভাই, এক ভগ্নিপতি, পিসির মেয়ে এবং এক নিরীহ ভাগ্নেকে কুড়াল দিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যাকে তিনি খুন করেছিলেন তিনি গর্ভবতী ছিলেন, এই মামলায় মৃত্যুদণ্ড পুনর্বহাল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর রাষ্ট্রপতিও শবনমের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন, এখন শীঘ্রই তার ফাঁসি হবে ।

No comments:
Post a Comment