গ্রীষ্মকালীন ফলের তালিকায় আম জামের পরেই আসে কাঁঠালের নাম। তাই আমের মতো কাঁঠালকেও বাঙালির জাতীয় ফল বলা যেতে পারে। কাঁঠালের একটি বৈশিষ্ট্য হল এটি অল্প বয়সে কাটা হয় এবং পাকা হলে ফল ধরে। অর্থাৎ কাঁঠাল দুইভাবে খাওয়া যায়।
রোগ ছড়ায়
জীবাণু উদ্ভিদের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে এবং বাতাস, জল এবং পোকামাকড়ের মাধ্যমে রোগ ছড়ায়। বর্ষায় ঝড়ের পর রোগবালাই বেশি হয়। ফুল ও ফল ধরার সময় গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় রোগের প্রকোপ বেশি হয়।ছায়াযুক্ত স্থানে পর্যাপ্ত আলোর অভাবে রোগের প্রকোপ বাড়ে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য উদ্ভিদের অনেক পুষ্টির প্রয়োজন হয়। এসব পুষ্টি উপাদানের কোনও একটির ঘাটতি বা অতিরিক্ত হলে কাঁঠাল অপুষ্টির শিকার হয়। এ কারণে কাঁঠাল গাছের পুষ্টি নিশ্চিত করতে একবার বর্ষার আগে, একবার বর্ষার পর আবার মুকুল আসার পর সার দিতে হয়। সার প্রয়োগের সময় মনে রাখবেন, বিকেলে গাছের ছায়া যতটুকু জায়গা দখল করে, সেই জায়গা কেটে সার দিতে হবে এবং স্প্রে করতে হবে। এছাড়া নিয়মিত সেচের ব্যবস্থা রয়েছে।
রোগের লক্ষণ
1. এই রোগটি গাছের ফুল এবং কচি ফলকে প্রভাবিত করে।
2. আক্রান্ত ফুল বা কচি ফলের কান্ডে জলীয় দাগ দেখা যায়।
3. আক্রান্ত ফল সাদা মাইসেলিয়ামে আবৃত থাকে।
4. পরবর্তীতে আক্রান্ত স্থানের কোষগুলো মারা যায় এবং কালো হয়ে যায়।
5. পরে পুরো ফলই সংক্রমিত হয়ে কালো হয়ে যায়।
6. অবশেষে আক্রান্ত ফল পচে যায় এবং পড়ে যায়।
রোগের প্রতিকার
বর্ষার আগে ও পরে 16 বছরের পুরোনো প্রতিটি কাঁঠাল গাছের জন্য 90 থেকে 100 কেজি গোবর, 1.5 থেকে 2 কেজি ইউরিয়া, 1 থেকে 1.5 কেজি টিএসপি এবং এমপি সার দিতে হবে। ফুল আসার সময় যেকোনও বয়সের গাছে 200 গ্রাম ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপি সার দিতে হবে। এটি মূলত কুঁড়ি পড়া থেকে বাধা দেয়।
গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
কাঁঠাল বাগানে কোনও জৈব সার বা কম্পোস্ট তৈরি না করাই ভালো।
বাগান পরিষ্কার রাখতে হবে।
ফল বেশি ঘন হলে পাতলা করে নিতে হবে।
প্রতিবার সার প্রয়োগ করার সময় সেচ দিন। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে প্রায় প্রতিদিন নিয়মিত সেচ দিতে হবে। এটি গাছের কুঁড়ি ছোট করবে, কাঁঠালের ডালপালা শক্ত করবে, ফলকে রসালো করবে এবং রোগের প্রবণতা অনেকাংশে কমবে। এ ছাড়া ফলনও তুলনামূলক বাড়বে।

No comments:
Post a Comment