ব্রুসেলোসিসে কী প্রথম মৃত্যু রাজ্যে? বড়দিনের আনন্দের মাঝেই রোগী মৃত্যুকে ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগ। রোগীকে ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃত ব্যক্তির নাম শরবিন্দু ঘোষ (৫১)। তিনি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বাসিন্দা। ৩০ নভেম্বর স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ভর্তি হন। এর আগেও তিনি অনেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার ডেথ সার্টিফিকেটে যদিও কোথাও ব্রুসেলোসিসের উল্লেখ নেই, তবে পরিবারের সদস্যদের দাবী, তিনি ব্রুসেলোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বর্ধমানের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর কাছে এমন কোনও খবর নেই।
তার পরিবারের সদস্যরা দাবী করেন, দুর্গা পূজার ঠিক আগে পোষ্যকে ব্রুসেলার টিকা দিতে বাড়িতে এসেছিল। টিকা দেওয়ার পর গবাদি পশুকে তিনি স্নান করান। সেখান থেকেই তার ব্রুসেলোসিস হয়েছে বলে পরিবারের সন্দেহ। স্বজনরা জানান, এর পর শরবিন্দু জ্বরে আক্রান্ত হন। এমনকি ডায়রিয়ার লক্ষণও প্রকাশ পেয়েছে। প্রথমে তাকে চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতালে এবং পরে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। প্রথমে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে নিয়ে আসা হয়।
চিকিৎসকদের মতে, শরবিন্দুর আরও অনেক রোগ ছিল। তার ডেথ সার্টিফিকেটে ব্রুসেলোসিসের উল্লেখ নেই বলে জানা গেছে। পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে, মৃত্যু শংসাপত্রে শুধুমাত্র মাল্টি-অর্গান ফেলিওর এবং সেপটিক শক উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু, তারা এটাও দাবী করেছে, তার ব্রুসেলোসিস ধরা পড়েছে এবং তার চিকিৎসা করা হচ্ছে।
ব্রুসেলোসিস ব্রুসেলা নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হতে পারে। এই রোগটি প্রধানত গবাদি পশুতে হয়। ফলে সংক্রমিত গাভীর দুধ ফুটিয়ে না খেলে বা তাদের সংস্পর্শে এলে রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ব্রুসেলোসিসের কিছু লক্ষণ করোনার মতো। জ্বর, হাত-পায়ে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
ব্রুসেলোসিস প্রধানত গরু, শূকর, ছাগল, ভেড়া ও কুকুরের একটি জুনোটিক রোগ। জন্মের সময় মলমূত্রের মতো সংক্রামিত উপাদানের সাথে প্রাণীর সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে বা পরোক্ষভাবে প্রাণীজ দ্রব্য খাওয়ার মাধ্যমে বা বাতাসে উপস্থিত বায়ুবাহিত এজেন্ট শ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হয়।
No comments:
Post a Comment