মানুষকে মাত্র কয়েক মিনিটে ছিঁড়ে খেতে পারে এই মাছ - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 1 August 2023

মানুষকে মাত্র কয়েক মিনিটে ছিঁড়ে খেতে পারে এই মাছ


 মানুষকে মাত্র কয়েক মিনিটে ছিঁড়ে খেতে পারে এই মাছ



প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০১ আগস্ট: পৃথিবীতে এমন একটি ভয়ানক মাছ আছে, যা এক পলকে মানুষকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে সাবার করে ফেলতে পারে। এই মাছকে নিয়ে হলিউডে অনেক হরোর সিনেমাও তৈরি করা হয়েছে, বলা হচ্ছে পিরানহার কথা। মানুষ কিংবা মানুষের চাইতে বড় আকৃতির কোনও প্রাণী যদি একবার এই মাছের সামনে পড়ে, তাহলে তার নিস্তার নেই। কয়েক কোটি বছর ধরে দক্ষিণ আমেরিকার মিঠা জলের হ্রদ, খারি আর নদীতে পিরানহা মাছ বসবাস করে আসছে। ভেনেজুয়েলার অরেনাক্কা নদীর অববাহিকা থেকে আর্জেন্টিনা পারানা নদীতে এদের ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যায়। 


প্রায় আড়াই বছর আগেও দক্ষিণ আমেরিকায় বসবাসকারি পিরানহা প্রজাতির জীবাশ্ম মিলেছে। ম্যাগাপিরানহা পেরানসিস নামের এ আদি সংস্করণ থেকে আধুনিক পিরানহার উৎপত্তি বলে দাবী বিজ্ঞানীদের। সব মাছের প্রজাতির মধ্যে পিরানহা মাছ অতন্ত ভয়াবহ ও দুরন্ত। আক্রমনাক্ত স্বভাবের এ মাছের দাঁত খুবই ধারালো এবং মাড়ি অত্যন্ত মজবুত, যাতে মূহুর্তেই যে কোনও প্রাণীকে টুকরো টুকরো করে ফেলতে পারে। বড় হয়ে এই মাছ প্রায় ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই মানুষের হাড় চিবাতে পারে।


 সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শিকারী হিসাবে পিরানহার খ্যাতি মূলত তার দাঁত এবং নিরন্তর কামড় দেওয়ার ক্ষমতার সুবাদে। পূর্ণ বয়স্ক এই মাছের দুই পাটি অত্যন্ত ধারালো দাঁত থাকে। কামড়ালে পাটি দুটি পরস্পর খাঁজে খাঁজে বসে যায়। পিরানহার দাঁতের আকৃতি অনেক সময় ছুরির ফলার সাথেও তুলনা করা হয়। এরা মাংসাশী বলে দাতের এমন গঠন খাবার খেতে সাহায্য করে। সারা জীবনে একাধিক বার দাঁত খোয়ায়, তবে তাদের দাঁত পড়ে যাওয়ার পর ফের গজিয়ছ উঠে‌। 


এই মাছ সম্পর্কে সাহিত্য ও সিনেমায় হাড়হিম ও ভয়ংকর বর্ণনা পাওয়া যায়। শিকার বা শত্রুর শরীরে দাঁত বসানোর সময় বিপুল শক্তি খরচ করে এই মাছ। ডেইলিমেলের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্ল্যাক পিরানহা তার নিজস্ব ওজনের ৩০ গুন বেশি শক্তিতে কামড় দিতে সক্ষম। এক গবেষণার মতে ব্ল্যাক পিরানহা মাছের কামরের শক্তি প্রায় ৩২০ নিউটন, যা আমেরিকার এলিগেটরের কামড়ের শক্তির প্রায় ৩ গুন বেশী। 


এছাড়া প্রগৈতিহাসিক মেগাপিরানহা প্রেনেনসিসদের মুখে দুইটির বদলে চারটি দাঁতের পাটি থাকত এবং এদের কামরের শক্তি ১২৪০ থেকে ৪,৭৫০ নিউটন বলে ধারণা করা হয়। প্রাণ ঘাতি এই মাছ প্রায় ৪০ থেকে ৬০ প্রজাতির হতে পারে, যার মধ্যে লাল বর্ণের উদর বিশিষ্ট পিরানহাকে অন্যতম ভয়ংকর মনে করা হয়। পিরানহা মাছ সব সময় শিকারের জন্য তৈরি থাকে। এরা ডিম থেকে বের হয়েই ফল এবং জলে থাকা ছোট ছোট বৃক্ষ খেতে শুরু করে। কিছুটা বড় হলে নিজে দিকে আসা মাছকে আক্রমণ করে। এরা বেশির ভাগ সময় দল বেঁধে চলে এবং দল বেঁধে শিকার করে। এই মাছের দলকে অনেক সময় ধারালো কাটিং মেশিনের সাথে তুলনা করা যেতে পারে, যারা শিকার দেখা মাত্রই টুকরো টুকরো করতে থাকে। শিকার যত বড় আর যত শক্তিশালী হোক না কেন এই মাছের সামনে যেন এরা অসহায় হয়ে পড়ে। 


এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে পিরানহার কয়টি প্রজাতি গর্জন করতে পারে। মৎস্য ব্যবসায়ীদের জালে ধরা পড়া লাল পেটওয়ালা পিরানহাদের এমন শব্দ করতে শোনা গেছে। শব্দটি অনেকটা কুকুরের ঘেউ ঘেউ- এর মতো। জলের নীচে পেলে মানুষকে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলতে এই মাছের জুড়ি নেই। 


যদিও গল্প কাহিনীর এই বর্ণনার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই, কেননা জীবিত মানুষকে পিরানহা কখনও আক্রমণ করে না। তবে দক্ষিণ আমেরিকার নদীতে নেমে হঠাৎ মারা যাওয়া মানুষের শরীরে এই মাছের ঝাঁক দাত বসিয়েছে এমন নজির বিরল নয়। ২০২২ সালে পেরাগুইয়াতে পিরানহার আক্রমণে ৪ জন মানুষ প্রাণ হাড়িয়ে ছিল আর প্রায় ২০ জন আহত হয়েছিল।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad