মহিলাদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা সাদা স্রাব - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 30 October 2024

মহিলাদের একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা সাদা স্রাব


প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,৩০অক্টোবর: মহিলাদের মধ্যে একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হল সাদা স্রাব,যাকে আয়ুর্বেদের ভাষায় শ্বেত প্রদর এবং ইংরেজিতে লিউকরিয়া বা লিকোরিয়া বলা হয়।সাধারণ ভাষায় লোকেরা এই রোগটিকে সাদা জল বা সাদা যোনি স্রাবের সমস্যা বলেন।এই সমস্যাটি সাধারণত সব বয়সের মহিলাদেরই হতে পারে,তবে এটি বেশিরভাগ যুবতী এবং গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়।যদিও মাঝে মাঝে এমনটা হওয়া কোনও রোগ নয়,তবে সাদা স্রাব খুব বেশি গাঢ় বা দুর্গন্ধযুক্ত হলে অবিলম্বে নজর দেওয়া দরকার।কারণ তা নারীর শরীরে দুর্বলতা সৃষ্টি করে।হাড় দুর্বল হতে শুরু করে, কোমরে ব্যথা হয়,ওজন কমতে শুরু করে এবং চুল পড়া শুরু হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।তাই সময়মতো চিকিৎসা করা জরুরি।

সাদা স্রাব (লিউকোরিয়া) কী?

মহিলাদের যোনি (ব্যক্তিগত অংশ) থেকে আঠালো সাদা স্রাব বের হয়। যদি একটু এবং মাঝে মাঝে ঘটে তাহলে ভয়ের কিছু নেই।পিরিয়ডের কয়েক দিন আগে এবং পরে এটি হওয়া সাধারণ।তবে যদি এই সমস্যা আরও কয়েক দিন ধরে থাকে তবে অবশ্যই এটি একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে পরীক্ষা করান। 

চিকিৎসকদের মতে,এই সমস্যার অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে কিছু প্রধান এবং প্রধান কারণ নিম্নরূপ -

গোপনাঙ্গের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখা।

ঘন ঘন প্রস্রাবের সংক্রমণ।

যোনি সংক্রমণের কারণে।

সহবাসের পর পরিচ্ছন্নতা বজায় না রাখা।

বেশি সেক্স করা বা বেশি গর্ভপাত করা।

হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।

ছত্রাকের সংক্রমণ।

মানসিক চাপ।

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন।

অনিয়মিত মাসিক চক্র। 

সাদা স্রাবের কারণে সমস্যা ও লক্ষণ -

সাদা স্রাবের সমস্যার কারণে মহিলারা ক্লান্ত ও দুর্বল বোধ করেন।  

হাড়ে ব্যথা হয়। 

ব্যক্তিগত এলাকায় চুলকানি এবং জ্বালা হয়।

মাথাব্যথা,মাথা ঘোরা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দেখা দেয়।

সাদা স্রাবের ঘরোয়া প্রতিকার -

ডুমুর: 

এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার সেরা প্রতিকার হল ডুমুর।  রাতে ৪টি ডুমুর ভালোভাবে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন এবং এই ডুমুরগুলো ভালো করে চিবিয়ে পরদিন সকালে খালি পেটে খান।এর জলও খেতে পারেন।এই প্রতিকার টানা একমাস করলে সাদা স্রাবের সমস্যা সেরে যাবে।

ভাজা ছোলা ও গুড়: 

ভাজা ছোলার গুঁড়ো বানিয়ে তাতে গুড় মিশিয়ে প্রতিদিন দুধের সঙ্গে খান।এটিও খুব কার্যকর।

দুধ-কলা খান: 

এক গ্লাস দুধে ১\২ চামচ ঘি ও কলা মিশিয়ে পান করুন।এতে শরীর থেকে দুর্বলতা দূর হবে এবং সাদা স্রাব থেকেও মুক্তি মিলবে।পাকা কলা ঘি,চিনি বা গুড় দিয়েও খাওয়া যায়।কলা যোনি থেকে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।  একটি পাকা কলা মাঝখান থেকে কেটে তাতে ১ গ্রাম কাঁচা ফটকিরি মিশিয়ে দিনে একবার খান। 

আমলকির গুঁড়ো ও মধু: 

মধুর সঙ্গে আমলকির গুঁড়ো মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার জলের সঙ্গে পান করুন।এছাড়া ১ কাপ জলে ১ চামচ আমলকির গুঁড়ো মিশিয়ে অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত ফুটিয়ে নিন।স্বাদের জন্য আপনি এই ক্বাথে মধু বা চিনিও যোগ করতে পারেন।এটি পান করুন।আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি,যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।২ চামচ মধুর সঙ্গে আমলকির গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে দিনে ২-৩বার খান বা আমলকির রস পান করুন।

গোলাপ পাতা: 

লিউকোরিয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গোলাপ পাতা একটি ভালো ওষুধ।এর জন্য গোলাপ পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো তৈরি করে নিন।এবার এই গুঁড়ো গরম দুধের সাথে মিশিয়ে পান করুন।  এক সপ্তাহের মধ্যে সাদা স্রাবের সমস্যায় পার্থক্য দেখা দিতে শুরু করবে।

ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজনীয় এবং ঘরোয়া প্রতিকার -

আপনি যদি অতিরিক্ত স্রাব,গন্ধ বা অন্যান্য উপসর্গ লক্ষ্য করেন,অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।সুষম খাবার খান, নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং পর্যাপ্ত ঘুমান।আপনি কিছু ছোট ঘরোয়া প্রতিকারও অনুসরণ করতে পারেন।যেমন: 

দই খান।এটি অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

তুলসী বা আদা চা পান করুন।

মেথি বীজ ১ লিটার জলে ফুটিয়ে পান করুন।এটি লিউকোরিয়ায় পিএইচ স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখে। 

লেবু জল পান করুন এবং লেবু দিয়ে আপনার শরীর পরিষ্কার করুন।

প্রতিদিন অন্তর্বাস পরিবর্তন করুন।

প্রস্রাব করার পর যোনিপথ পরিষ্কার করুন।

দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার জল পান করুন।

যোগব্যায়াম এবং প্রাণায়াম করা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক।

এগুলি হল কিছু ঘরোয়া উপায় যা আপনার সাদা স্রাবের সমস্যাকে সম্পূর্ণরূপে দূর করবে।আপনি এগুলির যেকোনও একটি অনুসরণ করতে পারেন।তবে যোনিপথে সংক্রমণ গুরুতর হলে অবশ্যই একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

বি.দ্র: এই বিষয়বস্তু,পরামর্শ সহ, শুধুমাত্র সাধারণ তথ্য প্রদান করে।এটা কোনওভাবেই যোগ্য চিকিৎসা মতামতের বিকল্প নয়। আরও তথ্যের জন্য সর্বদা একজন বিশেষজ্ঞ বা আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।  প্রেসকার্ড নিউজ এর দায় স্বীকার করে না।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad