নিজস্ব সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি, ০৩ জানুয়ারি: ঘরের ভেতর থেকে উদ্ধার এক তরুণীর ঝুলন্ত দেহ। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিলিগুড়িতে। জানা গিয়েছে, মৃতার নাম ফুলবতী দেবী, বয়স ৩০ বছর। দিল্লী নিবাসী ওই তরুণী গত দেড় বছর ধরে শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্কিমনগর এলাকার তিরঙ্গা মোড়ে এক ভাড়া বাড়িতে থাকতেন এবং শিলিগুড়িতে ইভেন্টের কাজ করতেন। তবে গত কয়েক মাস আগে থেকে নিজস্ব কিছু ব্যবসা শুরু করেন ফুলবতী। এসবের মাঝে আচমকাই ফুলবতীর এই মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরজুড়ে।
জানা যায়, ফুলবতী গত ৩১শে ডিসেম্বর দিল্লী নিবাসী তাঁর দিদি কল্পনাকে ভিডিও কল করেন এবং জানান, তার ব্যবসায় সহযোগকারী শুভঙ্কর নামে এক ব্যক্তি তাঁকে খুব মারধর করেছে। আর একথা শোনামাত্রই দিদি কল্পনা, বোনকে দিল্লী ফিরে যেতে বলেন। ফুলবতীও জানান, এক তারিখেই দিল্লী ফিরে আসবেন। ৩১শে ডিসেম্বর রাত দুটো পর্যন্ত এমনই কথা হয় দিদি-বোনের। তবে তার পর থেকে বোনের সাথে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি দিদি কল্পনার।
এতে করে সন্দেহ দানা বাঁধে দিদির মনে এবং গত এক তারিখই দিল্লী থেকে শিলিগুড়ি পুলিশের সাহায্য নেয় কল্পনা। শিলিগুড়ি ভক্তিনগর থানায় ফোন করে সমস্ত কথা জানায় ফুলবতীর দিদি কল্পনা। এদিকে সমস্ত কথা জানা মাত্রই সেই ভাড়া বাড়িতে পৌঁছায় ভক্তিনগর থানার পুলিশ এবং সেখানে পৌঁছে ফুলবতীর দিদি, কল্পনাকে ভিডিও কল করে ভাড়াবাড়ির দরজা ভাঙে পুলিশ। দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় ফুলবতীর ঝুলন্ত দেহ। তৎক্ষণাৎ সেই দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
অপরদিকে এই খবর জানা মাত্রই দিল্লী থেকে রওনা দেয় ফুলবতীর দিদি কল্পনা ও তাঁর স্বামী। শুক্রবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে বোনের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন দিদি-জামাইবাবু। এদিন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ফুলবতীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।
এই সমস্ত কিছুর পেছনে শুভঙ্করের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন ফুলবতীর দিদি কল্পনা ও তাঁর স্বামী। তাঁদের অভিযোগ, ফুলবতী এমন কাজ করার মেয়ে নয় এবং শেষবারের মতো ভিডিও কলে ফুলবতী বলেছিলেন, শুভঙ্কর তাঁকে খুব মারধর করে। এর পাশাপাশি, ফুলবতীর মৃতদেহ দেখেও দিদি কল্পনার মনে হচ্ছে যে তাঁকে খুব মারধর করা হয়েছে। কেননা তাঁর দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই দিদির আশঙ্কা তাঁর বোন আত্মহত্যা করতে পারেন না।
সন্দেহের তীর এখন শুভঙ্করের ওপর। তবে ময়নাতদন্তের পরেই জানা যাবে আসল রহস্য। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ভক্তিনগর থানার পুলিশ। আসলে কী ঘটেছিল, এটা খুন নাকি আত্মহত্যা সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
No comments:
Post a Comment