রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) মাধ্যমে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআইয়ের যুগ্ম পরিচালকের তত্ত্বাবধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলীর একক বেঞ্চে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে শুনানি হয়।
শুনানির সময় বিচারপতি গাঙ্গুলী বলেন যে, নবম এবং দশম শ্রেণিতে এসএসসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে সেই লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের নাম এসএসসির সুপারিশের জন্য পাঠানো প্যানেলে নেই। এতদসত্ত্বেও তারা কীভাবে নিয়োগ পেলেন, তা বিস্ময়ের বিষয়। সর্বোপরি, কীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এবং এর পিছনে কারা রয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা বের করা প্রয়োজন। এরপর বিচারপতি গাঙ্গুলীর একক বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সিবিআই ডিরেক্টরের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, এর আগে এসএসসির মাধ্যমে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-তে শিক্ষক নিয়োগেও একই ধরনের কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। নিয়োগ বোর্ড ভেঙে দিলেও তার সুপারিশে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগেও এই মামলায় সিবিআই-এর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশ বাতিল করেছিল।
এসএলএসটি নিয়োগ নিয়ে সিবিআই তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ২০১৬ সালে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আর্থিক লেনদেনে কোনও অমিল থাকলে সিবিআইকে জানান। ২০১৬ সালে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি প্রথমে আদালতে এলে প্রাথমিকভাবে এসএলএসটি থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ৪ জানুয়ারি এসএসসি চেয়ারম্যান যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তাতে দুই অভিযুক্তের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ওই দিনই বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী সিবিআই-এর যুগ্ম পরিচালককে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
এছাড়াও, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হল যে, সিবিআই এই দুর্নীতির পিছনে কারা রয়েছে তা খুঁজে বের করবে, সিবিআই অভিযোগকারীদের সাথে কথা বলবে এবং এর পিছনে আসলে কী ঘটেছে তা খুঁজে বের করবে। ২৮ মার্চের মধ্যে সিবিআই-এর কাছে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী বলেন, প্রাথমিক তদন্তের পর নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্ট। আদালত দীর্ঘদিনের অভিযোগ বহাল রেখেছেন। নিয়োগের পেছনে টাকার খেলা চলছে বলে জানা গেছে। অকৃতকার্য প্রার্থীদেরও চাকরি দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র টাকার জন্য। তালিকায় যাদের নাম নেই বা যাদের নাম নিচের দিকে, তারাও চাকরি পেয়েছেন। আবেদনকারীদের প্রশ্ন, এটা কীভাবে সম্ভব? আর যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা প্রয়োজনীয় নম্বর পাওয়ার পরেও চাকরি থেকে বঞ্চিত। তিনি এসএসসির বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন।
No comments:
Post a Comment