শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এখন ইডি হেফাজতে। দু’জনকেই একাধিকবার জেরা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, শনিবার সকাল থেকেই তাঁদের জেরা করেন ইডি আধিকারিকরা। সূত্রের দাবী, অর্পিতাকে নিয়ে তদন্তকারীদের মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তদন্ত যত এগোচ্ছে, প্রশ্ন উঠছে অর্পিতা কি আসলে পার্থের পুতুল? নাকি তিনি নিজেই পার্থকে আঙুলে নাচাতেন? সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অর্পিতার অনেক ভুয়ো কোম্পানির কথা জানতে পেরেছে ইডি। অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বহুবার বিদেশ সফরও করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডের মতো দেশ।
অর্পিতা ইতিমধ্যেই দাবী করেছেন যে, তার ফ্ল্যাট থেকে যে, প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, সেই টাকা তার নয়। পার্থের কোর্টে বল রেখেছেন তিনি। ইডির জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, এই টাকা তাঁর নয়। তাঁর বাড়ি পার্থ মিনি ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করত।
তবে তদন্ত যতই এগোচ্ছে, প্রশ্ন উঠছে, অর্পিতা কি অন্য কারও কালো টাকা সাদা করার কাজ করছিলেন? তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, অর্পিতা প্রথমে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে কোথাও তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায় নামে একজন প্রভাবশালী রাজনীতিকের পুতুল। কিন্তু পরে অর্পিতার সাথে সম্পর্কিত নথি উদ্ধার করা হচ্ছে, এই যুক্তি ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। অর্পিতার তিনটি কোম্পানির খোঁজ চলছে। তিনি ২০১১ সাল থেকে তার মধ্যে দুটির পরিচালক ছিলেন, তবে অর্পিতা দাবী করেছেন যে, তিনি ২০১২ সাল থেকে পার্থকে চেনেন। যে কোম্পানিগুলির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, সেখানে কোথাও না কোথাও তার এক সময়ের ড্রাইভারের নাম যুক্ত করা হয়েছে এবং এক কোম্পানির ডিরেক্টর তার অন্য কোম্পানির চাপরাসি।
পরে আরও তিনটি কোম্পানির সন্ধান পাওয়া যায়। তার মধ্যে একটি অর্পিতার বেলঘরিয়া ঠিকানায়। যদিও এর সাথে অর্পিতার সরাসরি কোনও যোগাযোগ নেই, তবে এই কোম্পানিতে কিছু নথি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে, যেগুলো অর্পিতার। কোম্পানিটি মার্চ ২০১২ সালে তৈরি হয়েছিল। এখানে প্রশ্ন হল ২০১২ সালে যখন অর্পিতা পার্থের সংস্পর্শে আসেন, তখন সেই সময় অর্পিতা এত দামি ফ্ল্যাট পেলেন কী করে? এটা এমন প্রশ্ন, যা ইডিকেও ভাবাচ্ছে। অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে এত টাকা শুধু এজন্য পাওয়া গেল, যে তিনি পার্থের 'ঘনিষ্ঠ'? নাকি অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে? যদিও তদন্তের পরই এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।

No comments:
Post a Comment