লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের অধীনে ৫০০ টাকা নেওয়া ব্যক্তিকে ভিখারির সাথে তুলনা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের। আর একজন জনপ্রতিনিধি তথা সাংসদের এমন মন্তব্য নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের পাল্টা দিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “যে হুঁশ ছাড়া কথা বলে, তার কথা কী বলব?" পাশাপাশি তাঁর দাবী, "কন্যাশ্রী ও লক্ষ্মী ভান্ডার নারীদের স্বাবলম্বী করেছে।"
শনিবার পানিহাটি উৎসবে ফিরহাদ বলেন, 'বাঙালি ভিখারি নয়। বাংলার মানুষ মাথা তুলে সগর্বে দাঁড়িয়ে থাকে। লক্ষ্মী ভান্ডার-কন্যাশ্রী হয়ে উঠেছে নারীদের আত্মতৃপ্তির মাধ্যম।'
ফিরহাদ বলেন, “ভারতের অর্থনীতি যখন স্থবির হয়ে পড়েছে, লকডাউনের পরে মহিলাদের টাকা ব্যবহার করা হয়েছিল। দিলীপ ঘোষের এটা বোঝার মত শিক্ষা নেই এবং সত্য বলার সাহসও নেই। শুভেন্দু অধিকারী শাল-কম্বল দেওয়ার নাম করে ৫ হাজার মানুষকে ডেকেছিলেন। এর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে পিষ্ট হয়ে। কি হয়েছিল? কম্বলের লোভ দিয়ে জনসভায় ভিড় জড়ো করা- এটা কি ভিক্ষা নয়?"
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীর ভান্ডার যোজনার অধীনে, রাজ্য সরকার তফসিলি জাতি ও উপজাতি মহিলাদের প্রতি মাসে ১০০০ টাকা এবং সাধারণ শ্রেণীর মহিলাদের প্রতি মাসে ৫০০ টাকা দেয়। শনিবার এ নিয়ে কটূক্তি করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। শনিবার দুর্গাপুরের এক জনসভায় দিলীপ ঘোষকে বলতে শোনা যায়, তিনি বাড়ির দরজায় তালা দিয়ে, রান্না বন্ধ করে দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছে। আজ আমরা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এত ভিখারি হয়ে গেছি। কারণ কিছুই তো পায় না, যা পান তাই ভালো। ৫০০ টাকা হলেও ঠিক আছে। এখানে সবাইকে ভিখারি বানানো হচ্ছে।"
শনিবার পানিহাটি উৎসবে উপস্থিত হয়ে তারই জবাব দেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, 'দিলীপ ঘোষের শিক্ষার অভাব রয়েছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার চালু করে মানুষের ভালো হয়েছে। করোনা আবহের মধ্যে মানুষের হাতে পয়সা ছিল না। মানুষের হাতে এই টাকা তুলে দিয়ে সরকার তাদের সাহায্য করেছে।'
এর পাশাপাশি এদিন আবাস যোজনা নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা যায় ফিরহাদকে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আবাসন প্রকল্পে কোনও ধরনের দুর্নীতি আমরা বরদাস্ত করব না। আবাসন প্রকল্প পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের এখানে স্বচ্ছতা আছে।
আবাস যোজনায় যে ধরনের অনিয়ম ধরা পড়েছে তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ জেলায় ভরতপুর এলাকায় ১৭ জন পঞ্চায়েত সদস্য গনইস্তফা দেন। এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের পুরো ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'যেভাবে অনিয়ম ধরা পড়ছে আবাস যোজনায় তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আবার যাচাই করা হচ্ছে। যে বা যারা এই ধরনের ঘটনা করে থাকুক, যোগ্য লোকরাই আবাস যোজনার সুবিধা পাওয়া উচিৎ।'

No comments:
Post a Comment