তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ক্ষুব্ধ, ভারতকে হুমকি চীনের!
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০১ সেপ্টেম্বর: তাইওয়ান হল চীনের সেই ব্যথার জায়গা, যেটা স্পর্শ করলেই ড্রাগন কেঁদে ওঠে। ভারতও আজকাল এমনই কিছু করেছে, যার জন্য রীতিমতো চিৎকার শুরু করেছে চীন। চীন বলেছে যে, 'বেইজিংয়ের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলোকে তাইওয়ানের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনও দেশ যদি তাইওয়ানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলে, আমরা তার বিরোধিতা করি।' সম্প্রতি ভারত ও তাইওয়ানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, যার কারণে চীনের ঝাল লেগেছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাক্তন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল করমবীর সিং, প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে এবং প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান অব এয়ার স্টাফ আরকেএস ভাদাউরিয়া তাইওয়ানে গিয়েছিলেন। তাইওয়ানে অনুষ্ঠিত 'কাতাগালান ফোরামের ২০২৩ ইন্দো-প্যাসিফিক সিকিউরিটি ডায়ালগ'-এ ভারতের তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেছেন। ভারতের এই পদক্ষেপে চীন ক্ষুব্ধ হয় এবং তাইওয়ানের বিরুদ্ধে লম্বা-চওড়া কথা বলে বসেছে। তার প্রতিটি কথায় ক্ষোভ ফুটে উঠেছে, সেটাও স্পষ্ট।
তাইওয়ান নিয়ে কী বলল চীন?
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর মতে, একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে সম্প্রতি তাইওয়ানি কর্তাদের মাধ্যমে তাইপেইতে একটি নিরাপত্তা সংলাপের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে অংশ নেন ভারতের তিন প্রাক্তন সামরিক কর্তা। আপনি এই বিষয়ে কি বলতে চান? পাকিস্তানি সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, 'চীন তাইওয়ানের সঙ্গে যেকোনও ধরনের আনুষ্ঠানিক আলোচনার বিরোধিতা করে।'
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, 'চীন তাইওয়ানের আধিকারিক এবং চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে সব ধরনের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের দৃঢ় বিরোধিতা করে।' তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে আমরা খুবই স্পষ্ট জানিয়েছি। আমরা আশা করি সংশ্লিষ্ট দেশ অর্থাৎ ভারত এক চীন নীতি অনুসরণ করবে। এটি তাইওয়ান-সম্পর্কিত সমস্যাগুলি যথাযথভাবে পরিচালনা করবে এবং তাইওয়ানের সাথে যেকোনও ধরনের সামরিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা এড়াবে।'
ভারত-তাইওয়ানের সম্পর্কে বৃদ্ধি
ভারত, চীনের এক চীন নীতি গ্রহণ করে, যার অধীনে তাইওয়ান চীনের একটি অংশ হিসাবে পরিচিত। যদিও এর পরেও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাইওয়ানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে। তাইওয়ানের অনেক প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ভারতে উৎপাদন কারখানা স্থাপন করতে চায়। তাইওয়ানের ইলেকট্রনিক কোম্পানি ফক্সকন ইতিমধ্যেই ভারতে বিনিয়োগ করছে। আগামী পাঁচ বছরে তাইওয়ান ও ভারতের মধ্যে ১৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের লক্ষ্য রয়েছে।
চীনের সাথে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে তাইওয়ান ভারতে ক্রমাগত বিনিয়োগ করছে। তবে, চীন সহ অন্যান্য দেশের সাথে ভারত ও তাইওয়ানের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। দূতাবাসের পরিবর্তে, তাইওয়ান ভারত-তাইপেই অ্যাসোসিয়েশন হিসাবে ভারতে একটি কূটনৈতিক ভবন স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে ভারতের সাথে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও, ব্যবসায়িক অংশগ্রহণ বাড়াতে দিল্লী ও চেন্নাইতে দুটি 'তাইপেই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র' খোলা হয়েছে।

No comments:
Post a Comment