প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ০১ নভেম্বর: মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতঃপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। এটি ছাড়া এক মুহুর্ত যেন চলে না। এমনকি রান্না করার সময়েও অনেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন বা নিজের কাছে রেখে দেন। আর রান্নার সময় মোবাইল কাছে রাখাই ডেকে আনল চরম বিপত্তি। মোবাইলের ব্যাটারি বিস্ফোরণে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ভিন্ড জেলার লাহারে।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম চন্দ্রপ্রকাশ দোহারে, বয়স ৪০ বছর। তিনি লহার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। বুধবার রাত ৮টার দিকে বাড়িতে খাবার রান্না করছিলেন। তার মোবাইলটি শার্টের বুক পকেটে রাখা ছিল। চন্দ্রপ্রকাশ নিচু হতেই মোবাইলটা গরম তেলের কড়াইতে পড়ে যায় এবং ব্যাটারিতে প্রচণ্ড জোড়ে বিস্ফোরণ হয়। এতে কড়াই থেকে ফুটন্ত তেল তার গায়ে এসে পড়ে এবং তিনি মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়। তাঁর পরিজনেরা তাকে লহার সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখান থেকে তাঁকে গোয়ালিয়রে রেফার করা হয়। কিন্তু পথে ব্রিজে জ্যামের কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি যেতে না পারায় অন্য দীর্ঘ পথ দিয়ে যাওয়ার সময় ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পরিবারের সদস্যরা তেলে দগ্ধ যুবককে অ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য গোয়ালিয়রে নিয়ে যাওয়ার সময় সেবাধা সিন্ধু নদীর উপর নির্মিত ছোট সেতুতে জ্যাম দেখতে পান। এর পরে, অ্যাম্বুলেন্সটিকে থ্রেট, ইন্দরগড়, ডাবরা হয়ে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ দিয়ে গোয়ালিয়রে নিয়ে যেতে হয়। এ কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালে পৌঁছাতে দুই ঘন্টা সময় লেগেছে।
দুর্ঘটনার তথ্য জানিয়ে মৃতের কাকা জানান, চন্দ্র প্রকাশ তাঁর বাড়িতে সবজি রান্না করছিলেন। হঠাৎ মোবাইল ফোনটি কড়াইয়ের গরম তেলে পড়ে সেটি বিস্ফোরিত হয়, এতে তার শরীর তেল ও আগুনে পুড়ে যায়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
পরিবারের সদস্যরা জানান, চন্দ্রপ্রকাশকে যদি সময়মতো গোয়ালিয়রের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যেত, তাহলে হয়তো তাঁর জীবন বাঁচানো যেত। মৃত চন্দ্র প্রকাশের বুধপুরা এলাকায় পাংচারের দোকান ছিল। এর মাধ্যমে তিনি তাঁর পরিবারের ভরণপোষণ করতেন। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন, মেয়ের বয়স ১৪ বছর এবং ছেলের বয়স ৮ বছর। যখন এই ঘটনাটি ঘটে, তখন চন্দ্রপ্রকাশের স্ত্রী তাদের মহিষকে চারণ খাওয়াচ্ছিলেন এবং তিনি তাঁকে রান্নায় সাহায্য করছিলেন। চন্দ্রপ্রকাশ ১৮ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন।
এই দুর্ঘটনার বিষয়ে লাহার থানায় ধনপত লাল দোহরার ছেলে অখিলেশের অভিযোগের ভিত্তিতে ৩৬/২৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে মোবাইল বিস্ফোরণে মৃতের মৃত্যু হয়েছে।

No comments:
Post a Comment