রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের প্রভাব বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে ভারতেও দেখা দিতে শুরু করেছে। ভারত থেকে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয় এসব দেশে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান এই যুদ্ধের কারণে পরিবেশ যে খারাপ হচ্ছে, তার প্রভাব পড়ছে রেশম বস্ত্র রপ্তানিতেও। বেনারস থেকে প্রতি মাসে কোটি টাকার সিল্ক পণ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আশেপাশের দেশগুলিতে রপ্তানি করা হয়, তবে রাশিয়া ইউক্রেনের সাথে খারাপ সম্পর্কের কারণে সেই রফতানিতেও উল্লেখযোগ্য হ্রাস নথিভুক্ত হয়েছে।
রিজওয়ান আহমেদ বেনারসে তাঁতির কাজ করেন। প্রতিদিন যে পরিমাণ কাপড় তৈরি হয়, সে অনুযায়ী তাদের আয় হয় এবং তার ভিত্তিতেই চলে ঘরের খরচ। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান এই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে রিজওয়ান আহমেদকেও। রিজওয়ান একক তাঁতি নন, তবে এলাকায় এমন অনেক তাঁতি রয়েছেন, যারা এই যুদ্ধে এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যে তাদের কাজ আগের তুলনায় এক চতুর্থাংশেরও কম হয়েছে। এ কারণে যেসব মেশিন দিন-রাত চলতো এখন প্রায়ই এভাবে বন্ধ পড়ে আছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান এই যুদ্ধ বেনারসের রেশম বাজারে কতটা প্রভাব ফেলেছে। মকবুল হাসান বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের সব দেশে বেনারসি সিল্কের কাপড় রপ্তানি করে আসছেন। মকবুল হাসানের মতে, গত দুই বছর ধরে করোনা ভাইরাসের কারণে তাঁতি ও রপ্তানিকারকরা ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত ছিলেন এবং রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার পরিবেশ খারাপ হতে শুরু করলে তা তাদের ব্যবসায়ও প্রভাব ফেলে। শর্ত হলো, যে কাপড় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সব দেশে রপ্তানি হতো, আজ পর্যন্ত সেখান থেকে তার চাহিদা ৫০ শতাংশেরও কম। চাহিদা কম থাকায় তাঁতীদের কাছ থেকে কম পণ্য নেওয়া হচ্ছে এবং এতে পুরো শিল্পই অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সব মিলিয়ে বেনারস শহরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মকবুল হাসান ও রিজওয়ান আহমেদের কথায় স্পষ্ট দেখা যায়। এই যুদ্ধ পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে বেনারসের তাঁতি ও রপ্তানিকারকদের ওপর এই যুদ্ধের প্রভাব আগামী কয়েক মাস অব্যাহত থাকবে। রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে পরিস্থিতি কতদিনের উন্নতি হয় তা দেখার বিষয়। এ সংকট আরও বাড়তে থাকলে তাঁতীদের সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
No comments:
Post a Comment